ছেঁড়া আলখেল্লা পরে একটি ফকির হো হো করে হাসতে হাসতে
দৌড়াচ্ছিল রাস্তা দিয়ে। আমি হাত ঊঁচু করে তাকে থামিয়ে দিলাম: কী ব্যাপার, এত হাসি কিসের? ভিক্ষেটিক্ষে কিছু চাই নাকি?
তওবা তওবা বলে সে দৌড়াতে লাগলো চোখবুজে। পশ্চাতে ফিরেও তাকালো না একটিবার।
কিছুদিন পর শহরের মাঝখানে তার সাথে ফের দেখা। অনেক দিনের পরিচিত কোনো মানুষের মতো কাছে এসে হাসতে হাসতে বললো, দেখুন কী কাণ্ড, এক ফকিরের কাছে আরেক ফকির চায় ভিখ!
-তাই নাকি?
সে হাসতে হাসতে বললো, সম্রাজ্ঞীর শাড়ি পরে এক ফকিরনি গেছে ভিন দেশী এক ফকিরের বাড়ি। কোট-টাইপরা ফকিরের কাছে ভিখ মাগে কোট-টাইপরা আরেক ফকির। ফকিররা সব ভিক্ষার মাল মজুদ করে সেজে আছে সম্রাট। বাড়ির মালিক, গাড়ির মালিক, মাঠের মালিক, ঘাটের মালিক, টাওয়ারের মালিক, পাওয়ারের মালিক বনে ধূর্ত শঠ ফকিরের দল মানুষকে ফেলে দেছে গোলক ধাঁধায়। পাখিরা অরণ্যে ঢুকে উদর পূর্তি করে খেয়ে যায় অরণ্যের ফল; কোনো পাখি এসে বাঁধ সেধে বলে না কখনও, এ বনের আমিই মালিক। পৃথিবীর পুষ্পে পুষ্পে মৌমাছিরা খুঁজে ফেরে তাদের আহার; তোলেনা প্রাচীর কেউ মাঝখানে এসে। মাটিতে শিকড় গেড়ে মুরগির বাচ্চার মতো যেন খুটে খুটে খায় বৃক্ষেরা আলো, বাতাস ও মাটিতে ছড়িয়ে দেওয়া তাদের রিজিক; কেউ নেই, বাঁধ সাধে তাদের খানায়। বিলিয়ন বিলিয়ন মাছ খানা খায় প্রতিদিন পানির সাম্রাজ্যে; বিলিয়ন বিলিয়ন পিপীলিকা খানা খায়; না, কোথাও কোনো দেয়াল নেই; দেয়াল কেবলি এ মানুষফকিরের সাম্রাজ্যে। হা হা হা, এক ফকির কেমন করে আরেক ফকিরের কাছে পেতে আছে হাত!- বলে সে হাসতে লাগলো অট্টহাসি।
-তোমার কি কিছু চাই নাকি?
তওবা তওবা বলে সে দৌড়াতে লাগলো চোখবুজে। পশ্চাতে ফিরেও তাকালো না একটিবার ।
২৩.৮.২০১২ মিলনমোড়, সিরাজগঞ্জ