#
আমার কোথাও আর যাবার নেই- আমার গ্রহ এখন সংকীর্ণ,
দু পা ব্যক্তিগত বৃত্তে, ইচ্ছেয় আবদ্ধ।
কারও জন্যে অপেক্ষা করার নেই- আমার বন্ধুরা সব মরে গেছে।
অথচ তারা চলতে পারে, বলতে পারে!
আগ্রহও নেই আর মানবিক অস্তিত্বের সংস্পর্শ চাওয়ার-
বড্ড ক্লান্ত হয়ে যাই; বিপন্ন, বিষন্ন হয়ে যাই মানুষের কাছে গেলেই।
আকাঙ্ক্ষা করি না আর কারো থেকে কিছু পাওয়ার-
এমন কাওকে তো দেখছি না যে আমাকে দিতে পারে ভালোবাসার পরাগ।
এখন শুধুই
সঙ্গী আমার নিসর্গ, সঙ্গী আমি হাওয়ার।
#
ঘুমের পাহাড় থেকে- মৃত্যুর নীলিমা থেকে চেতনার আঘাতে বৃষ্টির মতো
নেমে এলাম। এলাম নেমে যেখানে আমার সাথে রোজ রাত্রি করে বসবাস।
অতঃপর নেমে এলাম পিচের পথে- পৃথিবীর পথচলা সড়কের কালো পীঠে।
রোদের জীবন জ্বলে ওঠেনি এখনো। দু পাশে আমার সহযাত্রী-
নিসর্গের বুকে ডুব দেব বলে ফেরালাম দু চোখ, দেখেই চমকিত
হলাম। আশ্চর্য সচকিত হলো ইন্দ্রিয়ের শসস্ত্র সৈন্যরা!
সরল সৌন্দর্য এ কি! বিধ্বস্ত, বিশৃঙ্খল, এলোমেলো?
কি করে হয়ে গেলো এমন সহজ বন্যরা?
#
আমার সাথে বাতাস এখন কথা বলে- বাতাস এখন কথা বলে।
সবুজ ঘাসের চোখের নীলে জীবন জ্বলে ওঠে। সব রহস্য সব অনন্দ
সূর্যোদয়ে ও সূর্যাস্তে প্রাণ ছড়িয়ে রঙ উড়িয়ে গোলাপ হয়ে ফোটে।
আমার সত্তা নিয়ে আমি হেঁটে চলি নিসর্গ হৃদয়ে।
এখন আমি অনেক দূরে তেপান্তরে গেছি চলে
কিন্তু আমার মুখ বিরহে সবার সাথে কথা বলে।
বিস্ময়ে চোখ সবার দিকে চেয়ে থাকে।
প্রাত্যহিকের গ্লানিগুলো ঢেউ খেলে যায় মন পবনের বাঁকে বাঁকে।
#
ঝড়ের নখে বিপর্যস্ত নিসর্গ এই- বন্ধু আমার।
পথের নিচে কাঁচা পাতা শুকনো পাতা আমের মুকুল লুটিপুটি
খাচ্ছে করুণ দশায়। জলে ভিজে নাগরিক আবর্জনা
জবুথবু, আলুথালু। সামনে দেখি রাস্তা জুড়ে রক্তাক্ত এক
বিশার ডালের দেহ আছে পড়ে অচেতনে- নিথর হয়ে।
পাখির বাসা ইলেকট্রিকের তার ছড়িয়ে খড়কুটোতে মিলেমিশে সত্যি যেন
ধ্বংস হওয়া গ্রজনি শহর!
#
আশ্চর্য বিস্ময়ে চোখ আমার উজ্জ্বল হয়ে ওঠে,
চকচক করে স্বস্থি ও আনন্দে। আস্থার সমুদ্রে
বোধের নাবিক গেয়ে ওঠে এই বন্ধুত্বের গান।
১৩.০৩.২০০০
মন্তব্য করুন