(আফ্রিকা মহাদেশের দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের কন্ঠস্বর)
আমরা এখন আমাদের সম্বল মাথায় করে রোদপোড়া রাজপথ ধরে
শরণার্থী শিবিরের খোঁজে একপাল শঙ্কিত মেষের মতো হাঁটছি তো হাঁটছিই।
লক্ষ বছর অভুক্ত পথচলা যেন হয়ে গেছে, তবু একটু রুটির ঘ্রাণ
কিংবা আলুনি খিচুড়ির সন্ধান পাই নি আজও। পেয়েছি শুধু
ধু ধু প্রান্তর। যেখানে লাল রক্ত আর দুর্গন্ধ বারুদ মিলিমিশে হয়ে গেছে এক
জ্বলন্ত নরক! হাঁটছি তো হাঁটছিই কঙ্কাল শরীর নিয়ে যুদ্ধপোড়া সড়ক ধরে।
অবশেষে লক্ষ মানুষের গ্রাম্য হাটের মতন এক মৃত্যু মৃত্যু গন্ধ পাওয়া
মর্মন্তুদ শিবিরের পেলাম খোঁজ। যেখানে মৃত্যু, ক্ষুধা, আর্তনাদ
ছড়ার মতো সহজ।
যেখানে এক টুকরো খাবার পাওয়া পাথরে গোলাপ ফোটানোর মতই
নারীর যৌবন এক মুঠো ছাতুর মূল্যের সমান।
আমাদের সন্তানেরা আমাদের বুকের ধনুক হাড় গুনেগুনে
এখন নামতা শেখে
আমাদের মৃতপ্রায় শরীরগুলোকে লাশ ভেবে শকুন উড়ে।
মরা খাওয়া মাছিরাও ওড়াওড়ি করে শরীর জুড়ে
ছেলের লাশের পাশে জীবন্ত লাশের স্তূপ হয়ে পড়ে রই-
যুদ্ধ, মৃত্যু, দুর্ভিক্ষ ও শোকের দুর্ভেদ্য অন্ধকূপে মরছি আমরা জ্বলেপুড়ে।
আমাদের ভালোবাসা হৃদয় এখন গণকবরে পচতে থাকা
একটি লাশের মতো
পৃথিবীর মানুষেরা তাই গ্যালারিতে খেলা দেখতে থাকা দর্শকের মতো
দারুণ উৎফুল্ল।
নিঝ্ঝুম রাত্রিতে শুনতে পাই কারা যেন জাহাজ বোঝাই ফসল ফেলছে সাগরে
আর জীবনের গহ্বরে আমরা স্বপ্নহীন পড়ে রই সভ্যতার চোখের আলোয়।
১০.০৫.১৯৯৭
মন্তব্য করুন