আমার শৈশব বেলের আঁঠার মতো আমার সর্বাঙ্গে লেগে আছে।
সর্ষের তেলের মতো আমার কৈশোর সারা গায়ে মেখে নিয়ে
আমি যেন তৈরি হয়ে আছি ঝাঁপ দেওয়ার জন্যে দিঘির শীতল জলে।
দেশলাইয়ের বাক্সে ডাঁশমাছি ভরে গান শোনার রোদেলা দিনগুলো,
কাঠের গুলতি দিয়ে মাঠে মাঠে পাখি মারার বিফল সংগ্রাম
আর গাছের খোঁড়লে দোয়েল ও মাছরাঙার ডিম খোঁজার সুস্মৃতি
হৃদয়ের মধ্যে এসে খালি আটকে আটকে যায়
বর্ষাভেজা এঁটেল মাটির রাস্তায় যেভাবে জুতোপায়ে হাঁটতে গেলে
আটকে যায় পা।
আমের বোলের মউমউ করা ঘ্রাণ মেখে নিয়ে সারা গায়ে
আমি যেন অবাক দাঁড়িয়ে আছি ধানভরা কোনো বিলের কিনারে
আর কান পেতে শুনছি কেবল ঘুঘুর নরম সুর
এবং আমার দুচোখ কেমন নিশ্চেতন করে দিয়ে
ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাচ্ছে কোথা দূরে কাশফুল বকের মিছিল।
আমার দুচোখ কেবলি শৈশব ও কৈশোরে ফিরে যায়
আর দুরন্ত আমার শৈশব-কৈশোর
হাত ধরে নিয়ে যায় আমাকে কদমফুল ফোটা কপোতাক্ষের পাড়ে
যেখানে বাংলাদেশ ঘন ঘাসের জঙ্গলে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে
সন্ত্রস্ত একটি খরগোশের মতো।
২০.১১.২০০৮ ঝিনেদা (মেরামত: ১৭.৩.২০১৫ সিরাজগঞ্জ)
মন্তব্য করুন