দিগন্তে মৌ মৌ করতো মানবীয় মহিমা
আকাশের সুদার অহংকারে সত্যের শুভ্রশিশুটি আম্মা আম্মা বলে
সেমেটিক বিশ্বাসের কোলে ছড়া কাটতো, তার বর্ণিল খুশির
ঢেউ পূর্ব-পশ্চিম জুড়ে থৈ থৈ করতো বিহ্বল বাতাসে
অনাদীমাটির মমতায় বুকের পললে মুক্তিসেনানীর মতো জেগে উঠছিলো অগাধ সবুজ
সে সবুজ নারিকেলবাড়ীয়ায় তিতুর হৃদয়,
যে সবুজ আসানসোলে দুরন্ত তুফান, রুটির দুকান থেকে বেরিয়ে
ঘূর্ণির মতো নাচিয়ে দেবে মনোমহাদেশ!
বন্ধুগণ! আজ সময় এসেছে সেই সবুজের রহস্য ঘোষণার
যেভাবে রেসকোর্স মাঠে অফুরন্ত ঘোষণা
সাতকোটি সৈনিকের হাত সমজে দিয়েছিলো বাংলাদেশ,
যেভাবে কালুরঘাটে উলঙ্গ সূর্যের মতো অন্ধকারের আবরণ
ছিন্ন করেছিলো তুমুল ঘোষণা,
তেমনি যুগযুগান্তের প্রসবিনী প্রসব করবে রহস্যের পুত্রধন
আকাশে উৎকর্ণ আছে কৈ মাছের মতো নক্ষত্রের চাক
বুকের বোতাম খুলে স্থির হয়ে বসে আছে পাকা পেয়ারার মতো চাঁদ,
তার প্রেমাশ্রুর ঢলে অরণ্য উতলে উঠছে থরথর শিহরণে
সমুদ্র উন্মাতাল হয়ে উঠছে ক্রমে ক্রমে
জনগণ এসো এসো
লাল পতাকার মতো ব্যথাতুর, এসো এসো
সংগ্রামের জমিজুড়ে মাটিগন্ধী চাষা-ভুষা
চিরবিশ্বাসের তাতি জেলে মজুর, এসো এসো
শুভ্র সেই শিশুটির কথা বলবো, যে যৌবনে দাঁড়িয়ে এখন সবুজের ইশতেহার,
যৌবনে দাঁড়িয়ে এখন ঘুমন্ত পর্বত থেকে টেনে তুলে আগ্নেগীরির জিভ,
বিদ্যুৎ তরঙ্গ তুলে গোলাপপাঁপড়িতে ঘুমিয়ে পড়া আগুনের মর্মমূলে।
পৃথিবীর গোলাপগুলোতে গ্রেনেডের সম্ভাবনা দেখে পবিত্র গ্রন্থে হাত রেখে সে
বিপ্লবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদি তার জননীর বুক
বোমারুর ক্রোধে ছিন্নভিন্ন না হতো, তবে কি প্রেমের পালঙ্ক থেকে
হানজালার মতো লাফিয়ে ওঠে বদরের প্রতিরোধে ছুটে যেতো?
নাবলুস, জেনিনের জন্য রক্ত আর শ্যারনের জন্য মদ্যবন্টন সমাপ্ত হতে হতে
সে একবার দেখে নেবে শরণার্থী শিবিরে শহীদ জনকের সর্বশেষ
বেদনার বিনিময় কি হতে পারে?
সে যুবক যদি তবলা ও সেতার অতিক্রম করে
আত্মশক্তির বাদ্য বাজিয়ে
পৃথিবীতে কোনো নুহের তুফান নিয়ে আসে
তাহলে সেই উছলানো সবুজকে কোনো দোষ দেয়া যায়?