এক.
সূর্য ওঠে
আমরা শুনতে পাই মৃত্যুর সংবাদ
যখন বিহঙ্গ পাখা সাঁটে মহাশূন্য উত্তাল করে দিতে
সূর্য ওঠে
নড়ে ওঠে জল, আগুন, বাষ্প
শুনতে পাই নদীর জলে ঘুমন্ত ক্ষুধার প্রশ্বাস
শুনতে পাই আগুনদর্শনে ক্ষুধার্ত শিশুর খাদ্যের সম্ভাবনা
শুনতে পাই বাষ্পের ঢেউয়ে মহাজাগতিক নাকাড়া
এরই শব্দ তাড়িয়ে নেয় রাত্রির স্নানে মুগ্ধ যৌবনকে
সরোবর থেকে যৌবনের
সে দৌঁড়ায় কাস্তে হাতে পিছনে
পড়ে থাকে মৃত্যুর সংবাদ।
মৃতআত্মার নিঃশব্দ হাহাকার প্রকম্পিত করে প্রতিটি দুর্যোগ
রাত্রির পথ ভেঙে সূর্যের হাসির সাথে
কথা বলতে চায় মৃত্যু
তার ব্যাকুল ধ্বনিগুলো করুণ কান্নার মতো
কিষাণের খেতের দিকে এগিয়ে যায়
কিষাণ ডুবে থাকে ফসলের স্বপ্নে
নিঃশব্দে মৃত্যু এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতার হুংকারে
বাতাসে শোরগোল ওঠে তারপর ফসল পেঁকে যায়
আরেকদিন ভোরে
মৃত কিষাণের ছেলে কাস্তে হাতে ছুটে ফসল কেটে নিতে
তার পথের বাঁকেই ঠায় পিতার কবর।
দুই
মৃত্যু পৌরাণিক বিড়ালের মতো শূন্যতায় নির্বিরাম সংকেতে
ভরা বরষায় ষোড়শীর ধ্যানচ্যুতি, অন্ধকারে হামলে পড়া
দুস্যসূর্যের মতো গোলকান্তে প্রস্তানের নির্মম চিৎকার
দ্যাখো দিগন্তে তার টুকরো টুকরো যুগসূত্র
অরণ্যে তার ছিন্নভিন্ন কলরব
আমার উঠানে ছলকে ওঠা নৃত্যের ছায়ামৃগে ঠিকরে পড়ে
অধরা আলোর সতৃষ্ণ মনন, মর্ত্যের মহামঞ্চে ছড়িয়ে দেই
তার জ্বলজ্বলে উদ্দীপনা,
তখন মৃত্যু এলে জ্যোতির্ময় সরল
আন্দোলিত প্রেমিক আছাড়
ইপ্সার পাখিটার পিছু ছোটে সুতীব্র তুফানে
ধ্বংসলীলা মেঘনাদে গতি তার ঝিমুতে জানে না
শস্যের স্বপ্নে ঢুকে নির্বোধ, খেত বুজে না
অবিরত গর্জমান, পারে না শাশ্বতের ওঁম ছুঁতে
তাই তো কিষাণই জয়ী অস্তিত্বের সমরে
মৃত্যু নয়, পৃথিবী দেখে পাঁকা ধানী মাঠ!