আকাশে ধুঁয়োর কুণ্ডুলী গোখরো সাপের মতো ছড়াচ্ছে বিষ
তার উপর দাঁড়িয়ে চাঁদের দিকে তর্জনী তুলে মাননীয় সাম্রাজ্যবাদ
মুসলিম বিশ্বসংক্রান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করছেন
হোমসের ফসলি উঠানে আকাশ থেকে বমি করুক ‘ সভ্যতার ’ কনকর্ড
অসংখ্য বৃক্ষ পাখি নারী – শিশুর লাশ আর গরম রক্তের ফোয়ারায়
দাউদাউ জ্বলন্ত জনপদ জুড়ে রচিত হোক ‘ প্রগতির ‘ পাণ্ডুলিপি !
পৃথিবীর উর্বরতার জন্যই এ রক্ত , এ লাশ !
আফগান , ইরাক , ফিলিস্তিন …
যিশুর পৃথিবীতে এরা এন্টিক্রাইস্ট !
লাঞ্ছনার পোকামাকড় সব , নিয়তি তাদের গায়ে মেখে দিয়েছে কাদা
তৃতীয়বিশ্বের কেউ কি মানুষ ? ওদের হত্যা করো
বুকে বুকে প্রীতি নিয়ে ঈদগাহে যাচ্ছে দল বেঁধে
ওদের বিশ্বাসে জ্বলছে সাম্যের বিকল্প বিশ্বলোক
আমাদের বিশ্ব এটি , এখানে না কোনো বিকল্প , না কোনো চ্যালেঞ্জ
মুসলমানরা কি মানুষ ? ওদের হত্যা করো
কমপক্ষে একটি করে গণকবর সৃষ্টির কৃতিত্বে
উজ্জীবিত সৈনিকেরা দাঁড়াও !
ঈদের প্রত্যুষে তোমাদের দেয়া হলো গণহত্যার অধিকার !
স্ফুলিঙ্গের মতো ঈদগাহে ছোটা এই কিশোরদের ধরো আগে
ওদের চোখে লকলক করছে স্বাধীনতার শিখা , উপড়ে ফেলো চোখ
ওদের বুকে শাঁ শাঁ করছে বিজয়ের স্লোগান , গুড়িয়ে দেও বুক
নিরাশার নদীতে জায়নামাজ বিছিয়ে ভোরের বন্দরে
ওরা যাত্রা চায় , পুড়াও জায়নামাজ
হৃদয়ে ওদের প্রেম আর বিশ্বাসী অনল , হৃদপিণ্ড কুকুরকে দিয়ে এসে
এদের মাথায় ছাউনি ফেলছে বিপ্লবের রোদ , পিষে ফেলো মাথা
ওদের মুখে জ্বলজ্বল করছে প্রত্যয়ী বিদ্যুৎ , বুলডোজাৱে দলিত করো মুখ
বায়ুমণ্ডলে সন্ত্রাসের হুমকি কমাতে হলে গণহত্যা চাই
চিন্তা নেই , এতে যদি ঝড় উঠে কোথাও ,
আমরা তাকে রজ্জুতে লটকাৰো
হত্যা করবো স্বয়ং স্বাধীনতাকে
দ্রিম দ্রিম করে এ নিয়ে বাজিয়ে যাবো ভীতির দামামা
অতঃপর কোন ধৃষ্ট আত্মার পতাকা নিয়ে রোরুদ্য সময়কে ছিড়ে
মুমূর্খ হাওয়ায় দ্রোহের ছড়াবে তুফান ?
গোলার্ধে গোলার্ধে মাননীয় সাম্রাজ্যবাদ পাঠ করবেন
নতুন পৃথিবীর বিধিলিপি !
সেই পৃথিবীর সব শস্যের রঙ হবে নীল
সব পাখিকে বাধ্যতামূলকভাবে গাইতে হবে একই গান
অনুমোদিত হাসি – কাশি – ভালোবাসাবাসি ছাড়া
আর কোনো দৃশ্য রচিত হবে না কোথাও
একটিমাত্র ঋতু পূর্ব – পশ্চিম – উত্তর – দক্ষিণে
দ্বিপদ যন্ত্রপাতির মাথার উপর দিয়ে ধেই ধেই নাচতে থাকবে একটানা
সর্বত্র গীর্জার ঘন্টা , গণতন্ত্র , লিভটুগেদার …
তছনছ পরিবার ছেড়ে বারে – পার্কে মত্ত রবে আত্মারিক্ত পুরুষ
ঘরহারা নারী হবে
চৌকস পণ্য কিংবা লাওয়ারিশ বার্গার
তবেই তো ব্যক্তির মুক্তি , পৃথিবীর পূর্ণ স্বাধীনতা
সেই পৃথিবীর পক্ষে অন্তরীক্ষে পরাশক্তির যৌবন গর্জায়
সময়ের বাদামী চামড়ায় মড়কের প্রচ্ছদ আঁকে বহুজাতিক হাত
খেতখামারে আহত স্বপ্নের হাড়গোড় পেঁচিয়ে
বিষাক্ত হাই তুলছে মত্ত অজগর
জগতের সমস্ত ন্যায় ও সুন্দরকে ধারণ করে বন্দিশিবিরে
পোকামাকড়দের বেয়াদব ঈদকে চুবানো হচ্ছে তপ্ত পানিতে !
এভাবে আর কতো ? এই চিত্র অনিঃশেষ ?
সাপের উদরেই থামলো ইতিহাসের নদীস্রোত?
পশুর কারাগারে আর্তনাদ করতে থাকবে মানুষের ঈদ?
না না বলে স্থুল নৈঃশব্দকে ভস্ম করে মাটির ভেতর থেকে
উঠে এলো শত শত শহীদ কিশোর ।
সৌরভের গ্রেনেড যেনো , পৃথিবীতে ঘটাবেই ওরা
প্রেম আর স্বাধীনতার মহাবিস্ফোরণ
মৃত্যুই এদেরকে দিলো এই অধিকার।
শহীদ আত্মাদের সামুদ্রিক অভ্যুত্থানে
ঝলসে উঠছে আগামীর ঈদগাহ – জায়নামাজ ।
সেখানে নামাজ পড়তে আলোর লেবাস পরে
আকাশে মার্চপাস্ট করছে ঈদের সকাল।