ডাকছো তুমি / সাইফ আলি

এই কি আমার হাতের কামাই? আবদ্ধ ঘর!
এই কি আমার কাব্য কলার আরাধ্য স্বর?
এই আঁধারের ভিটেয় অতল ঘুমের ব্যরাম
ভুলিয়ে দিতে চাচ্ছে সকল আবদ্ধ খাম।
খুলবো কিনা ভাবছি বসে ভাবছি বসে
মিলছে না তো সকল হিসেব অঙ্ক কষে!
রক্ত মাখা একটা চোখের নিরব বয়ান
সূত্রে ফেলে যায় কি বাঁধা? নেই সমাধান!
যোগ বিয়োগের কিতাব পড়ে লাভ হলো কি
সবাই বলে তোমাই ছাড়া ভালোই আছি!
হয়তো আছি শিকল পরে সকল পায়ে,
কয়টা বুলেট বিঁধলো সেদিন তোমার গায়ে?
গুণতে গিয়ে একটা দুটো কণ্ঠ ধরে
বুকের ভেতর আগুন পাখি ঘুমিয়ে পড়ে!
সেই যে ভীষণ বিষাক্ত নীল ঘুমের বড়ি
ঘুম ভাঙে যেই আাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি!
ঘুমিয়ে পড়ি ঘুম ভেঙে যায়, ডাকছো তুমি!?
পায়ের নিচে রক্তে কেনা তোমার ভূমি!

০৩/০৪/২৩

স্বাধীনতা / সাইফ আলি

তুমি ফুলে ফুলে ওঠা বুকের জমিনে বাতাসের বিপ্লব
তুমি কবিতায় রাঙা রাজপথ
ভেঙে পাখিদের উৎসব!

তুমি একা বেড়ে ওঠা শিশুটির চোখ
নীল নীল নীলাকাশ
তুমি যুবকের বুক যুবতীর ঠোঁট, ভালোবাসা একরাশ।

তুমি স্বাধীনতা, তুমি ভাঙা গড়া, তুমি দুকূল ভাসানো নদী
আমি ঘুমাতাম খুব ঘুমাতাম আজ তুমি না হতাম যদি।

২৮/০৩/২৩

যদি ভুলে যেতে পারি / সাইফ আলি

ভালো হয় যদি ভুলে যেতে পারি
খুব তাড়াতাড়ি
অতীতকে নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি ভালো নয়
ভালো হয় যদি ভুলে যেতে পারি;
অথচ আনাড়ি এখানেও আমি, পারিনা;
পারছি না কিছুতেই যে!
যতবার ভাবি শুধু কল্পনা, কে যেনো চেঁচায়- ‘সেই যে!
ডাগর দুচোখ সাগর সুনীল ঢেউ টলমল টলকায়!!’
পাথরের মতো আমি আছি খাড়া
কে যেনো ভেতরে ছলকায়!
‘আহারে আনাড়ি!’ নিজেকে শাসাই,
‘কোন সে আশায় ভুললি
ভোলার শপথ; এতো তাড়াতাড়ি
স্মৃতির জানালা খুললি!’

চাইনি খুলতে, চেয়েছি ভুলতে; করেছি জানালা রুদ্ধ
তবু সে দানব ঝড় হয়ে যেনো গিলছে সকলই শুদ্ধ!

‘আঙুরের মতো টসটসে ভোর
দুয়ারে দাঁড়িয়ে কাঁদলো!
হতোভাগা তোর জানালায় চোখ!
রাত্রির চুলে বাঁধলো?
কেটে ফেল ঐ বাঁধন এখনই মুক্ত হাওয়ায় দুলতে…’
যতবার ভাবি ভুলে যাবো, হায়! কিছুই পারিনা ভুলতে…

১৭/০৩/২৩

অনুকবিতা ৪৫ / সাইফ আলি

পথের কাটারা থাক জেগে
ক্লান্ত দুচোখ যেনো ঘুমিয়ে না পড়ে,
এলোমেলো ভাবনার ভারে
বিচ্যুত হলে যেনো
আমার পক্ষ হয়ে লড়ে।

১০/০৩/২৩

হারানোর পথ কার জানা / সাইফ আলি

হারাবার পথ কার জানা?
হারাতে যে চায়
বাতলাও হারানোর পথ,
কেনো তাকে ধরে আনো,
বেঁধে রাখো আঁটোসাটো করে?
থাকতে যে চায়, কখনো তো হাত ধরে
কাছে টেনে করোনা আপন…
আমিও হারিয়ে যাবো দেখো, হৃদয়ের পিঞ্জরে
খুব করে বাঁধবে যখন।

১০/০৩/২৩

ভাঁটফুল / সাইফ আলি

তোমাদের ঘ্রাণ নিতে
কখনোও নামিনি যে পথে
সে পথেই দল বেধে কেনো ফুটে থাকো?
কিছুই বলোনা তবু কেনো যেনো মনে হয়
আমাকেও ফুল হতে ডাকো!
চোখ নেই, তবু চেয়ে থাকো….

১০/০৩/২৩

আমি এক ছোটো কবি / সাইফ আলি

কবিতার পাখি তুমি কি আমার হৃদয়ের গতি বোঝো,
তুমি কি আমার চোখের চাহনি বোঝো,
কি বোঝাই আমি ইশারায় ইঙ্গিতে?
হয়তো বোঝো না, বুঝলে কি আর খাঁচা ভাবো? থাকো দূরে?
তুমি গান গাও, আমি হারাই তোমার সুরে।

কবিতার পাখি, আমি এক ছোটো কবি,
শব্দের সাথে বোঝাপড়া বেশ ভালো;
তুমি যদি চাও তোমার জন্য কবিতা গাঁথতে রাজি
তোমার জন্য সহস্রবার নিজেকে ভাঙতে রাজি।

১২/০১/২৩

আমি রাখবো না ধরে আমার শহরে / সাইফ আলি

আমি রাখবো না ধরে আমার শহরে
উড়ে যাও পাখি উড়ে যাও,
তুমি ভীরু পায়ে কেনো জানালায় এসে
প্রেমিকের মতো পুড়ে যাও!?
বিশ্ববাজারে মন্দা ভীষণ সস্তায় প্রেম বিকোনা
মার্কেট ভ্যালু আমলে না নিয়ে গান টান জেনো শিখোনা
শিখলে সে গান সেধো না এখানে, দূরে যাও পাখি দূরে যাও-
ভীরু পায়ে কেনো জানালায় এসে
প্রেমিকের মতো পুড়ে যাও!

বাতাসে এখন বারুদ ভীষণ
যেদিকে তাকাও পুড়ে যাওয়া বন
তবু অকারণ কেনো পাখি তুমি আসলে?
তুমি হারাবে তোমার পালকের রঙ এ শহর ভালোবাসলে;
পাখি, বুক পেতে আছি, নখরে তোমার পারলে পাথর খুঁড়ে নাও।

৩০/১১/২২

নালায়েক / সাইফ আলি

ডুবি ডুবি করে নৌকা ভিড়লো পাড়ে
লাফিয়ে লাফিয়ে যাত্রীরা হাফ ছাড়ে-
:কোনোমতে বাঁচা বুঝেছেন চাচা
শতবার নাকে খত,
ফের যদি উঠি
নালায়েক বলে ডাকবেন আলবৎ।

:কি বলো ভাতিজা ওপাড়ে ফেরার
একটি মাত্র নাও!
নাম বদলালে বদলাও তবে এটাতেই ফিরে যাও।

কপালের রেখা বেড়ে যায় ভাতিজার,
এই নাও ছাড়া বিকল্প নেই আর!?

১৭/১১/২২

Create a website or blog at WordPress.com

Up ↑

%d bloggers like this: