যুদ্ধ / আফসার নিজাম

সন্ধি নয় যুদ্ধ, যুদ্ধের জন্য যুদ্ধ? শান্তির জন্য যুদ্ধ
কৃষক যে বীজ বুনে দিলো তার নাম যুদ্ধ
বীজ ফেটে যে অঙ্কুরোদগম হলো তার নাম যুদ্ধ
যে যুবক অজানার দিকে হেঁটে চললো তার নাম যুদ্ধ
যে কিশোরী যুবতী হওয়ার আগেই যুবতী হলো তার নাম যুদ্ধ
গ্রেনেড ছোঁড়ার নাম যুদ্ধ, গ্রেনেডে পা উড়ে যাওয়ার নাম যুদ্ধ
বুলেট ছোঁড়া যুদ্ধ, বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে যাওয়া যুদ্ধ
যুদ্ধ-যুদ্ধ-যুদ্ধ, যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, শান্তির জন্য যুদ্ধ।

যুবক যুদ্ধ, যুবতী যুদ্ধ
বিয়ে যুদ্ধ, তালাক যুদ্ধ
মা যুদ্ধ, বাবা যুদ্ধ
জন্ম যুদ্ধ, মৃত্যু যুদ্ধ
দিন যুদ্ধ, রাত যুদ্ধ
তুলি যুদ্ধ, কলম যুদ্ধ
রবীন্দ্র যুদ্ধ, নজরুল যুদ্ধ
কবি হওয়া যুদ্ধ, কবিতা লেখা যুদ্ধ
হামলা করা যুদ্ধ, প্রতিরোধ করা যুদ্ধ
জান দেয়া যুদ্ধ, জান নেয়া যুদ্ধ
ট্রেনিং দেয়া যুদ্ধ, ট্রেনিং নেয়া যুদ্ধ
যুদ্ধ-যুদ্ধ-যুদ্ধ, মুক্তির জন্য যুদ্ধ, শান্তির জন্য যুদ্ধ।

সামনে চলার জন্য প্যাডেলে পা রাখার নাম যুদ্ধ
প্যাডেলে প্যাডেলে চাকা সচল রাখার নাম যুদ্ধ
একমুঠো ভাতের জন্য লড়াই করার নাম যুদ্ধ
জমিনের বুক চিরে শস্য উৎপাদন করার নাম যুদ্ধ
বাবা হওয়ার জন্য নারীকে চুমু খাওয়ার নাম যুদ্ধ
মা হওয়ার জন্য পুরুষকে আলিঙ্গন করার নাম যুদ্ধ
জন্ম নিয়ে যে শিশুটি চিৎকার করে আপন অস্তিত্ব জানান দেয় তার নাম যুদ্ধ
চিৎকার শুনে যে মা জেগে উঠে ভুলে যায় প্রসববেদনা তার নাম যুদ্ধ
যুদ্ধ-যুদ্ধ-যুদ্ধ, মানবিকতার জন্য যুদ্ধ, শান্তির জন্য যুদ্ধ।

মাটি যুদ্ধ, পাথর যুদ্ধ
আকাশ যুদ্ধ, বাতাস যুদ্ধ
পাহাড় যুদ্ধ, সমতল যুদ্ধ
নদী যুদ্ধ, সমুদ্র যুদ্ধ
জড় যুদ্ধ, জীব যুদ্ধ
পশু যুদ্ধ, পাখি যুদ্ধ
জনপদ যুদ্ধ, সেনাবাস যুদ্ধ
কারাগার যুদ্ধ, কারাবাস যুদ্ধ
রাষ্ট্র যুদ্ধ, বিরাষ্ট্র যুদ্ধ
রাজা যুদ্ধ, প্রজা যুদ্ধ
দেশের জন্য যুদ্ধ, দেশ জয়ের জন্য যুদ্ধ
যুদ্ধ-যুদ্ধ-যুদ্ধ, যুদ্ধ জয়ের জন্য যুদ্ধ, শান্তির জন্য যুদ্ধ।

পৃথিবীকে আলোকিত করার জন্য ভোরে যে সূর্য ওঠে তার নাম যুদ্ধ
রাতের আঁধারে যে কুলনারী প্রদীপ জ্বেলে দেয় তার নাম যুদ্ধ
পৃথিবী রক্ষার জন্য যুদ্ধ করার নাম যুদ্ধ
পৃথিবী রক্ষার জন্য মারণাস্ত্র তৈরি করার নাম যুদ্ধ
অধিকার আদায়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ার নাম যুদ্ধ
জীবন বাঁচাতে যুদ্ধ, জীবন সাজাতে যুদ্ধ
মারার নাম যুদ্ধ, মরে অমর হওয়ার নাম যুদ্ধ
যুদ্ধ-যুদ্ধ-যুদ্ধ, বাঁচার জন্য যুদ্ধ, শান্তির জন্য যুদ্ধ

কুরআন যুদ্ধ, বাইবেল যুদ্ধ
ত্রিপিটক যুদ্ধ, গীতা যুদ্ধ
হিন্দু যুদ্ধ, মুসলিম যুদ্ধ
খ্রিস্টান যুদ্ধ, বৌদ্ধ যুদ্ধ
বাঙালি যুদ্ধ, অবাঙালি যুদ্ধ
কালো যুদ্ধ, শাদা যুদ্ধ
ধর্ম যুদ্ধ, নিধর্ম যুদ্ধ
উত্তম যুদ্ধ, অধম যুদ্ধ
মরা যুদ্ধ, বাঁচা যুদ্ধ
প্রথম যুদ্ধ, শেষ যুদ্ধ
ভালোবাসতে যুদ্ধ, ভালো না বাসতে যুদ্ধ
যুদ্ধ-যুদ্ধ-যুদ্ধ, প্রাণের জন্য যুদ্ধ, শান্তির জন্য যুদ্ধ।

জীবন বদলের জন্য যুদ্ধ, জীবন না বদলের জন্য যুদ্ধ
আগ্রাসন করার নাম যুদ্ধ, আগ্রাসন প্রতিরোধ করার নাম যুদ্ধ
হানাদার মারার নাম যুদ্ধ, হানাদার মারতে গিয়ে মরার নাম যুদ্ধ
শহিদমিনারের দিকে শহিদজননীর হেঁটে যাওয়া যুদ্ধ
স্মৃতিসৌধের শিরটি আসমানের দিকে উঠে যাওয়া যুদ্ধ
রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের যুদ্ধ, রাষ্ট্রের পক্ষে রাষ্ট্রের যুদ্ধ
অযুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধের যুদ্ধ, যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধের যুদ্ধ
যুদ্ধে যাওয়ার নাম যুদ্ধ, যুদ্ধে না যাওয়ার নাম যুদ্ধ
যুদ্ধ-যুদ্ধ-যুদ্ধ, জীবনের জন্য যুদ্ধ, শান্তির জন্য যুদ্ধ।

ফুল যুদ্ধ, ফল যুদ্ধ
উৎপাদন যুদ্ধ, বন্টন যুদ্ধ
বৃষ্টি যুদ্ধ, অনাবৃষ্টি যুদ্ধ
কৃষক যুদ্ধ, শ্রমিক যুদ্ধ
পুরুষ যুদ্ধ, নারী যুদ্ধ
শান্তি যুদ্ধ, অশান্তি যুদ্ধ
গরিব যুদ্ধ, ধনী যুদ্ধ
আপন যুদ্ধ, পর যুদ্ধ
বাড়ি যুদ্ধ, গাড়ি যুদ্ধ
বিদ্রোহ করা যুদ্ধ, বিদ্রোহ দমন যুদ্ধ
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা যুদ্ধ, শান্তি শান্তি বলা যুদ্ধ
যুদ্ধ-যুদ্ধ-যুদ্ধ, আলোর জন্য যুদ্ধ, শান্তির জন্য যুদ্ধ।

কারখানার চাকা ঘুরাতে শ্রমিকের যে ঘাম ঝরল তার নাম যুদ্ধ
ঘাম শুকানোর আগে যে মালিক পারিশ্রমিক মেটালো তার নাম যুদ্ধ
মানুষ বাঁচানোর নাম যুদ্ধ, হত্যা-খুন-গুম করার নাম যুদ্ধ
যুদ্ধের জন্য যুদ্ধ, যুদ্ধ না করার জন্য যুদ্ধ
আঁধারের বিরুদ্ধে আলোর যুদ্ধ, আলোর বিরুদ্ধে আঁধারের যুদ্ধ
রাজনীতির জন্য গণতন্ত্রের যুদ্ধ, গণতন্ত্রের জন্য রাজনীতির যুদ্ধ
যুদ্ধে যাওয়ার নাম যুদ্ধ, যুদ্ধে না যাওয়ার নাম যুদ্ধ
যুদ্ধ-যুদ্ধ-যুদ্ধ, স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ, শান্তির জন্য যুদ্ধ।

ইশকের বয়ান / আফসার নিজাম

১.
জুলেখা আঁধারে ঝড় হয়
ছিঁড়ে যায় লজ্জা
পড়ে থাকে সবুজ শার্ট
সেলাই বিহীন।

২.
তুলতুলে রাত বেয়ে নেমে আসে
আয়েশা রাত
আঁধারের বুকে জ্বলে
নুরের গেলাফ।

৩.
দৃষ্টির মেঘ হয়ে উড়ে আসে
রাবেয়া সময়
জিকিরে জিকিরে ভাসে তার
ইশকের বয়ান।

যন্ত্রণার কাক এবঙ বর্ষার চিহ্ন / আফসার নিজাম

প্রতি মুহূর্তে নেমে আসে যন্ত্রণার কাক
ক্ষত-বিক্ষত করে হৃদয়
কেবল বাঁধগুলো জেগে উঠে
মৃত্যুর হাতছানি দিয়ে
ভাটিতে শূন্য হয় তৃষ্ণার নিয়ামক
তবু প্রবল আগ্রহে চোখ মেলে দেখি
আকাশে বর্ষার চিহ্ন।

গ্রহণকাল / আফসার নিজাম

এ এক গ্রহণকাল-

মানুষ আর বিশ্বাস স্থাপন করছে না
নিজের প্রতি
নিজেকে আর আপন মনে করছে না
ক্রমাগত ভেঙে যাচ্ছে নিজের ভেতর
ক্রমাগত বিদ্রোহ করছে নিজের প্রতি
ক্রমাগত যুদ্ধ করছে নিজের সাথে।

হায় সময়-
আমাকে তুমি আর আমার আয়নায়
দেখছো না আমায়।

নিজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে- কবে
কবে বিজয়ী হবো
কবে বিশ্বাসের সাথে উচ্চারণ করবো
এই যে আমি
আমি একজন মানুষ
আমার একটা ইতিহাস আছে।

আষাঢ়ের পদাবলি / আফসার নিজাম

এবঙ নদী… জোয়ার ভুলে গেলে
কাকড়ার পায়ে আটকে থাকে
পৃথিবীর ইউরেনিয়াম সুখ
সুখের সমুদ্রে বৃষ্টির ভ্রুণ
প্রথম জন্ম…
উড়ে যায় মেঘ
দ্বিতীয় জন্মের আগেই
পাল্টে নেয় নিজের অবয়ব
এবঙ কারুকাজ খচিত নামের অলংকার।

অলংকারে সাজুগুজু বিমুগ্ধ বউ
প্রাঙ্গণে গীতরত মজমায়, ঢেলে দেয়…
ঝরে পড়ে রহমত; ঝরে পড়ে বৃষ্টি
তখন সোনালি হুদহুদ জামদানি রঙ মেখে
মোনাজাতে উড়ায় ডানার পালক।

অতএব আমাদের দহলিজে
বৃষ্টি
বৃষ্টি
বৃষ্টি
জমির জায়নামাজে এখন
আমাদের ফসল বুনার সময়।

তিনপুরুষ এবঙ পুত্রপ্রজন্ম / আফসার নিজাম

প্রথম পুরুষ

আমার এ উপদেশ পুত্র এবঙ পুত্রের পুত্র
এবঙ অনাগত পুত্রপ্রজন্মের জন্য।

উপদেশগুলো তাদের কল্যাণে
কারণ আমার চোখের চলচ্চিত্র
তাদের থেকে অধিক ধারণ করেছে
এই পৃথিবীর উত্থান-পতন
হিটলারের বিশ্ব-শাসনের খায়েশ
মিত্রবাহিনীর সভ্যতা ধ্বংসী এটম আঘাত
হিরোসিমা নাগাসাকির বীভৎস চিত্র
আর দেখেছি লাল পতাকার ফোবিয়া।

দ্বিতীয় পুরুষ

আমার উপদেশ
আমার পুত্রের জন্য অভিজ্ঞতার জাদুঘর
কারণ আমি অর্জন করেছি
পুরুষ পরমপরায় আদম থেকে নিরাকার পর্যন্ত
যেহেতু আমার অভিজ্ঞতায় আছে
বাঁশেরকেল্লার দ্রোহ
স্বাধীনতার জন্য
ফাঁসির রশি আর জীবনদানের প্রেরণা
এবঙ নবান্নের উৎসবের মতো
নতুন দেশ পাবার আনন্দ
এরপরও আছে ভাষা নিয়ে আন্দোলন
আর ভেঙে যাওয়া দেশ।

তৃতীয় পুরুষ

পূর্বপুরুষের অভিজ্ঞতার চোখ ছুঁয়ে দেখেছি
ইতিহাসের পান্ডুলিপি

যেমন দেখেছি একাত্তরে নেতার কতুব মিনার হয়ে যাওয়া
তারপর ক্ষুধার্ত মানুষ-কুকুর এবঙ কালো কাকটিও
এরপর ক্ষুধার্ত জাতির কুতুব মিনারটি
ললাট থেকে লুটিয়ে পড়লো মর্তলোকে
আর দেখেছি ভেঙে পড়া লাল পতাকার তাসের ঘর
সাম্রাজ্যবাদিদের নাঙা তালোয়ার
লাদেন-সাদ্দাম
চাপিয়ে দেয়া গণতন্ত্র
সারি সারি বোমারু বিমান
আফগান-ইরাক-আবুগারিব কারাগার।

আমি আরও দেখেছি
আরো-আরো-আরো অনেক
আর এতোসব অভিজ্ঞতার ভেতরে
আমি ছুঁয়েছি বাংলাদেশ

পুত্রপ্রজন্ম

আমার পরবর্তী পুত্রপ্রজন্মেরা
তোমরা এখান থেকে লেখা শুরু করবে
………………………………………
………………………………………
………………………………………

সিল্কি আঁধার / আফসার নিজাম

১.
চুলের সিল্কি আঁধারে ডুবে গেলে সূর্য
ফিরে আসে কোমল ঘুম

আর যখন চৈতন্য ফেরে-
ফিরে আসে ঘাসের জীবন।

ফিরে আসে ঘুম ফেলে রাতের নাগর
আরামের ঘুম তারে দেয় না আরাম
তাই কেটে যায় রাত্রী
প্রার্থনায়-

সুখ যদি দিতে পারে সিল্কি আঁধার।

২.
সে রাতে আর কেউ আসেনি
বিরিকুলি গাছের নিচে
সিল্কি আঁধার নাকি চুষে নেয়
দাঁড়াশজীবন।

আর ফেলে যায় কয়েকটি শুভ্রপালক
এবঙ ত্রিরঙ অশ্রু ফোঁটা।

৩.
ফেরারী জীবন আর যায় না চৈত্র দুপুরে
অদৃশ্য হয়ে গেলে আলোক পথিক

খুঁজে ফেরে তাকে-
আতাইকুলের বুকে পশমওলা দীর্ঘপুরুষ
সিল্কি আঁধারে যদি পেয়ে যায় তারে।

৪.
কেউ কেউ দেখেছিলো
বলেছিলো
সূর্য ডুবে গেলে
বেড়াতে এসেছিলো পূর্ণিমা আলো
সে নাকি সিল্কি আঁধারে
ডুব দিয়ে তুলে আনে আলোর ফসিল।

৫.
সিল্কি আঁধার সেদিন
বলেছিলো সূর্যকে ডেকে
যতোই আলো তুমি জ্বালাও বুকে

আমি ‘তোর’ বুক চিড়ে নিয়ে যাবো
সকল সকাল
রেখে যাবো আলোহীন
সিল্কি আঁধার।

চুমু / আফসার নিজাম

শহরের সব প্রজাপতি
আমার চুমুর জন্য অপেক্ষা করে
আমি ছাড়া আর কে বা আছে?
একটি ভালোবাসার চুমু দেবার

কারণ তারা জানে
মেঘ আমার চুমু খেলে জমিনে বৃষ্টি হয়
বীজ আমার চুমু খেলে
উঠোন ভরে যায় ফসলে
আর প্রজাপতি- চুমু খেলে
কোল জুড়ে নেমে আসে পবিত্র শিশু
শিশুরা আমার সন্তান- আমি তাদের পিতা

পিতা আমি- শহরের রাজা ভ্রমর
শহরের প্রজাপতি চুমুর গোলাপ
শহরের শিশুরা চুমুর ফসল।

রেহনুবার শারাব / আফসার নিজাম

১.
দীর্ঘ সময় যে ফুলের ঘ্রাণ
উত্তরাধিকারী হয়ে বিলায় জীবন
তেমনি তোমার আশায়
উৎপ্রেক্ষার চিত্রকল্প আঁকি
বনদোয়েলের অভিজ্ঞতায়।

২.
জোসনার স্রোতে সাঁতার কেটে
ইছামতি বৃষ্টি আনতে গেলে
ফিরে এসে দেখি
অপেক্ষায় চোখ তোমার
হয়েছে পাথর।

৩.
মধ্যরাতের ঘুম ভেঙে গেলে দেখি
রক্তজোসনার আলো-ছায়ায়
শিশুবৃক্ষের আনন্দলোক
তখন ঘুমঘোর ঐশ্বর্য পান করে
স্বাগত চন্দ্র রাঙাই।

৪.
রূপমুগ্ধ দৃষ্টির প্রবাহে জেগে উঠলে প্রকৃতি
আমি আমুগ্ধ পান করি রেহনুবা শারাব।

ছায়া ও অশ্বথ বিষয়ক খন্ডকবিতা / আফসার নিজাম

এক/ক.
সূর্য ডুবে গেলে
কবরের ঘুমে যায় অশ্বথ ছায়া
একচিলতে রোদের আশায়
পরবাসী স্বামীর মতো
অপেক্ষার প্রহর কাটায় প্রাচীন অশ্বথ।

এক/খ.
সব রাত্রী ঘরে ফেরে
তিনমাথা মানুষের মতো
একচিলতে রোদে
ছায়া হয়ে শুয়ে থাকে প্রাচীন অশ্বথ।

দুই/ক.
চৈত্র দুপুরে আমার ছায়াটি অদৃশ্য হয়ে গেলে
দীর্ঘ পদযাত্রায় ক্লান্ত পথিকের মতো
ছায়া খুঁজতে অশ্বথের নিচে দাঁড়ালে
কোথা থেকে লোকটি এসে জিজ্ঞেস করে-

কি খুঁজছেন হুজুর?
ছায়া। আপনি?
আমিও।

দুই/খ.
অশ্বথের নিচে দাঁড়িয়ে লোকটিকে বলতে শুনেছি
সব পথিকের ছায়া কেড়েছে প্রাচীন অশ্বথ
আমি তার মূল খুড়ে ছায়া নিয়ে যাবো
এই দেখুন খন্তা কুড়াল…
বলেই লোকটি খুড়তে থাকে অশ্বথের শেকড়

আজও সে খুড়ে যাচ্ছে
কান সজাগ থাকলে আপনিও শুনতে পাবেন।

তিন/ক.
গতকাল সূর্যের আলোয় যে সুরমা রঙের ছায়াটি
আমার উঠোন পর্যন্ত এসেছিলো
আজ রাতেও চাঁদের আলোয়
সে আমার প্রাঙ্গণে আছড়ে পড়েছে
তাকে পাঁজাকোলা করে ঘরে প্রবেশ করি
সে মিশে যায় আমার ভেতর

এখন আমার কোনো ছায়া নেই।

তিন/খ.
ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে
যে উচ্চারণ করে
আমার কোনো ছায়া নেই-

প্রভু সে তোমার প্রতিদ্বন্দ্বি হতে চায়।

Create a website or blog at WordPress.com

Up ↑

%d bloggers like this: