ভাঁটফুল / সাইফ আলি

তোমাদের ঘ্রাণ নিতে
কখনোও নামিনি যে পথে
সে পথেই দল বেধে কেনো ফুটে থাকো?
কিছুই বলোনা তবু কেনো যেনো মনে হয়
আমাকেও ফুল হতে ডাকো!
চোখ নেই, তবু চেয়ে থাকো….

১০/০৩/২৩

আমি এক ছোটো কবি / সাইফ আলি

কবিতার পাখি তুমি কি আমার হৃদয়ের গতি বোঝো,
তুমি কি আমার চোখের চাহনি বোঝো,
কি বোঝাই আমি ইশারায় ইঙ্গিতে?
হয়তো বোঝো না, বুঝলে কি আর খাঁচা ভাবো? থাকো দূরে?
তুমি গান গাও, আমি হারাই তোমার সুরে।

কবিতার পাখি, আমি এক ছোটো কবি,
শব্দের সাথে বোঝাপড়া বেশ ভালো;
তুমি যদি চাও তোমার জন্য কবিতা গাঁথতে রাজি
তোমার জন্য সহস্রবার নিজেকে ভাঙতে রাজি।

১২/০১/২৩

যদি আর ভালো নাই লাগে? / সাইফ আলি

কতোদূরে চোখ গেলে আগেভাগে দেখা যায় সব
বুঝে নেয়া যায় কথা মুখ থেকে বেরোনোর আগে
কতোকাছে গেলে তার করা যায় সত্য অনুভব
কতো ভালোবাসলে মন রাঙা হয় তার অনুরাগে?

ততোদূরে চোখ দিতে ভয় হয়, হারানোর ভয়
না বোঝার ভান করে বার বার শুনি তার কথা;
দূরত্ব রেখে রেখে কাছে যায়, তার পরিচয়
হয়ে গেলে পুরোপুরি জানা
যদি আর ভালো নাই লাগে?

২৭/০৯/২২

আমরা দু’জন জ্বলবো যখন / সাইফ আলি

মেঘলা আকাশ, সন্ধ্যা নামার একটু পরই দুপুর হলে
আরেকটু পর নীলের মায়ায় লালচে আভা তুলোর মতো!
এমন করে যখন তখন বদলে যাওয়া আকাশ হলে
কেমন করে ভুলবো বলো; তুলবো ঘরে কেমন করে?
একটু খানি সহজ করো, চাঁদ হয়ে যাও
আর না হলে মেঘের কুচি,
মোমের মতো গড়িয়ে পড়ো হাতের উপর, পুড়ুক না হাত;
জোছনা হয়ে গিলতে পারো উপচে পড়া সবটুকু রাত।

হাত ধরে কেউ নিখোঁজ হলে তার খোঁজে না যাওয়াই ভালো;
আমরা দু’জন জ্বলবো যখন বলবে না কেউ- জ্বলছে আলো।

২৫/১০/২১

মধ্যরাতের হাওয়ায় / সাইফ আলি

‘মধ্যরাতের হাওয়ায় কেমন গন্ধ থাকে’
বললে তুমি অবাক চোখে তাকাও
কারণ তোমার জানলা তখন বন্ধ থাকে
মধ্য রাতের হাওয়ায় কিছু ছন্দ থাকে।

তা না হলে এই যে আমি রাত্রি জেগে
কাব্য লেখার নেশায় এমন বুদ হয়ে যাই,
দিনের বেলা যে রাস্তাটা বন্ধ থাকে
সে রাস্তাতেই জোছনা নামে দারুণ মায়ায়!

মধ্যরাতের হাওয়ায় কিছু দ্বন্দ্ব থাকে
খুঁজলে তাতে ছন্দ থাকে, গন্ধ থাকে।
২৭.০১.২১

প্রয়োজন মিটে গেলে বলে দিও / সাইফ আলি

প্রিয়
প্রয়োজন মিটে গেলে বলে দিও
ঝরা পাতা হবো, বহুকাল পুরোনো এ শখ
আর এই কথা জেনে রাখা তোমাদের হক।

প্রয়োজন মিটে গেলে কানে কানে ফিসফিসে স্বরে
বলে দিও- ‘আসতে পারেন’ ছোটো করে- ‘এসো’।
বহুদিন যাইনি কোথাও,
বেড়ানোর ছলে
কৌশলে সরে যাবো, জানবে না কেউ;
স্বপ্নেও আসবো না কারো
আর যদি পারো
আকারে বা ইশারায়; সবচেয়ে ভালো হয় সেই
এর থেকে সাবলিল আর কোনো বিচ্ছেদ নেই।
প্রিয়
প্রয়োজন মিটে গেলে আত্মাও রাখে না এ দেহ
তাই বলে দিও
আমি জানি, তোমাদের ভালোবাসা, স্নেহ
কোনোদিন ফুরোবে না, কমবে না একচুল মাপে;
কেবল পচন ধরে সময়ের উত্তাপে, ভাপে।
২৭.০১.২১

যখন আমার সঙ্গে চলো / সাইফ আলি

তোমার আমার গল্পগুলো কেউ না পড়ুক কি আসে যায়
কি আসে যায় সবুজ শাখায় একটু ঝড়ো দমকা হাওয়ায়
জোছনা এবং তারার আলোয় পথ চলে আর কজন বলো
স্রোতের মতো সব বয়ে যায় যখন আমার সঙ্গে চলো।
১৮.০৮.২০

বিষণ্ণ এই দিনকে কেবল তোমার জন্য বদলে দিই / সাইফ আলি

‘বিষণ্ণ এই দিনকে কেবল তোমার জন্য বদলে দিই
জান-মাল দিয়ে মাগফিরাতের চাদর শরীরে জড়িয়ে নিই,
মৃত্যুর ভয়ে ভীত হয়ে নই তোমার খুশিতে বাঁচতে চাই
শহীদি মৃত্যু জোটে যদি তবে তোমার করুণা দাও আমায়।

তোমার জন্য আমার নামাজ, আমার সাওম, আমার হাজ্জ্ব
তোমার কাছেই নিরব কান্না, তোমারই জন্য তুলি আওয়াজ,
রোগে-শোকে খুঁজি তোমার করুণা, তোমার ওয়াদা মিথ্যে নয়
তবে আর কিসে বিচলিত হবো, তুমি যদি দাও পাবো বিজয়।’

‘‘মহামারী আনে শহীদি মৃত্যু! ভয় কি মুমিন তোমার রব
যদি ডেকে নেন সে সৌভাগ্য লুফে নিতে ছেড়ে দিতে এ সব
প্রস্তুত থেকে মানুষের পাশে নিঃসঙ্কোচে দাঁড়াবো আজ;
‘তোমার খুশিতে কুরবান হতে প্রস্তুত আমি।’- তুলি আওয়াজ।’’

২৪.০৩.২০

কিভাবে কোথায় আমি দাঁড়াবো তখন / সাইফ আলি

এইসব ভাঙাচুরো চেয়ার-টেবিল, বই-খাতা, আলনা কিংবা ড্রেসিং-টেবিল যা আমরা ঘর থেকে বের করে দিলাম-
একদিন সেগুলোও সযত্নে গোছাতেন কেউ।
আমিও এমন এক ভাঙাচুরো জড় হয়ে থাকবো না তোমাদের ঘরে
আমাকেও ঘুনে খাবে, উইপোকা পাঁজরের হাড়ে
বসাবে কামড়।

গিবতের দায় নিয়ে, বেড়ে যাওয়া নাক নিয়ে
কিভাবে কোথায় আমি দাঁড়াবো তখন?

০২.০৮.১৯

কবি ও কবিতা / সাইফ আলি

আমার সঙ্গে কিছু শব্দের মেলামেশা ছিলো
যখন তখন তারা ঢুকে যেতো মনের গভীরে
এ বিষয়ে অভিযোগ সবথেকে বেশি ছিলো যার
সে আমার প্রিয়তমা চেয়েছিলো পুরো অধিকার।

অথচ কবির মন ফেড়ে কবে কোন ডাক্তার
পেয়েছে কেবল নারী, গাড়ি, বাড়ি আর সংসার?
শব্দের আনাগোনা কবির শ্বাসের মতো,
প্রিয়তমা সেও এক রূপ কবিতার।

০৪.১০.১৯

Create a website or blog at WordPress.com

Up ↑

%d bloggers like this: