:এক দেশে এক রাজা ছিলো
তার ছিলো এক রাজকুমারী;
রাজকুমারী পরীর মতো…
:আচ্ছা বাবা ওসব রাখো
যেই পরীটা ট্রাকের নিচে
সেদিন বসে চাল কুড়োলো
তার কি হলো?

যখন হারিয়ে যায় পাখিরাও মেঘেদের ভিড়ে
আমাদের নীড়ে পড়ে থাকে অপুষ্ট ছানা,
চোখ চায় ঘুম আর পিঠ চায় নরম বিছানা;
আমরা সজাগ হই, কথা কই, শুনি নিজে নিজে-
হাত কাপে, অনুতাপে চোখ যায় ভিজে।
আবার পাখিরা ফেরে
মেঘ গলে বৃষ্টি হয়ে ঝরে
আমাদের ঘরে;
ছানাদের চোখ ফোটে, পালকে পূর্ণ হয় পাখা।
‘কতোদিন ঘুমাইনি’ বলে হাই তুলি ছড়িয়ে দু’হাত
আকাশ অন্ধকার কোরে নেমে আসে আরেকটা রাত।
১১.০৪.২২
বদলে দেবো অনেক কিছুই
বদলাবো না নিজে,
ঠান্ডা লাগার অসুখ আমার
মরবো নাকি ভিজে?
বিপ্লবী মন স্বপ্ন দেখে,
স্বপ্ন ভাঙার দোষে
ইচ্ছে করে মিছিল করি
কিন্তু জনরোষে
নিজেই যদি পুড়ি তখন
উপায় হবেটা কি;
তার চেয়ে ভাই নীরব আছি
নীরব হয়েই থাকি।
০৯.০৪..২২
গোলামীর জিঞ্জিরে বাঁধা আছে পা
তাই আমি কিছুতেই কথা কবো না;
ঝড় বয়ে যাক মাথা নিচু করে আছি,
দীর্ঘ জীবন আমি এভাবেই বাঁচি।
০৮.০৪.২২
অখ্যাত এক গলির মুখে
ও মন তুমি কাঁদছিলে না?
শিউলি ফুলের মালার মতো
দুঃখগুলো বাঁধছিলে না?
তোমার মালা কিনবে যারা
সুখ ভাঙিয়ে অল্প দামে,
প্রেমিক তারা হতেও পারে
আর না হলে প্রেমের নামে
ছল চাতুরি তাদের পেশা।
আচ্ছা তোমার ঠোঁটের হাসি
ছাপিয়ে অমন কান্নাগুলো
বের হয়ে যায় হর-হামেশা?
যাক সে কথা, সাবধানে খুব
চলবে কেমন, দিন ভালো না;
দুঃখ করে লাভ কি বলো
দুঃথ তো আর জমকালো না।
২১/১১/২১
গ্রামছাড়া রোদগুলো শহরের অলি-গলি-মোড়ে
কেমন লেপ্টে আছে! যেনো এক ছিঁড়া কাঁথা কোনোমতে ঢেকে আছে
ফুটপথ শিশুর শরীর।
আলোহীন চোখ নিয়ে এরা শুধু অঁধারেই ঘোরে
ঘোরের ভিতরে,
অথচ ধানের খেতে দিতে হবে পানি।
সরষের মখমলে হাত রাখা কিশোরীর যুবতি সময়
বস্তির কুড়ে ঠেলে বের হয়, রোদ মাখে, চোখ মোছে;
মুখে দেয় রাতের তারকা; তারপর বিক্রি হয়
পুরাতন কাপড়ের দরে।
২১.১১.২১
আমিও অবাক হই
তোমাদের কথা শুনে
তারা গুণে দিনের আকাশে!
তোমরা দেখোনা কেউ
আগুন লাগিয়ে কারা
মিটি মিটি হাসে।
কথা ছিলো সংবাদ
পাঠ হলে শব্দের রুহে
হাত রেখে করবে বিচার,
অথচ তোমরা আজ
নিজেরাই বিচারক,
কথা নেই, ব্যাখ্যা নেই, সাক্ষ্য নেই
নেই কোনো বোধের বালাই
ঝাপিয়ে পড়ছো; ইশশ!
পাবে বকশিস?
কোরান কি বলে?
তোমাদের বোধের দোকান
মেধাহীন বুঝি আজ এভাবেই চলে?
১৬/১০/২১
কোনো মৃত্যুই এখন আর আমাদের বিচলিত করে না
খেলার মাঠে জমে ওঠা বর্ষার জলে যেমন জমে ওঠে
শামুকের সংসার তারপর জল নেমে যেতেই
মৃত শামুকের খোলগুলো পড়ে থাকে এখানে সেখানে
ঠিক তেমনই আমাদের খোসাগুলো পড়ে থাকে ধানখেতে
খালে বিলে শহরের ড্রেনে!
আমরা এখন এক ধ্যানের মধ্যে আছি
এখন যদি পৃথিবী ধ্বংশ হয়ে যায় আমাদের কি হবে!?
সর্বচ্চ মৃত্যু ছাড়া আর কোনো কঠিন বিপদ আমাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।
আমাদের বাজারগুলো খুলে যাক, দিতে হবে!
কারণ আমরা জানি, আমাদের মোড়লেরা খুব জোর
এক সপ্তাহ তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে পারবে;
আসলে তারা কখনোই অন্তর্বাসে অভ্যস্ত ছিলো না!
০৬.০৫.২০
ডাকটিকিট, অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২১
কেউ জমা করে কাড়ি কাড়ি টাকা
কেউ জমা করে স্মৃতি,
আমাদের কাছে জমা হয়ে আছে
ক্ষুধা ভয়। সম্প্রীতি?
সে কেবল শুধু মুখে মুখে বাজে
বাস্তবে বহুদূর,
কথা ছিলো একসাথে লেখা গানে
একই সাথে দেবো সুর!
কথার কথা! সে ভুলেছে সবাই
মেপেছে আপন রাস্তা,
মানুষে মানুষ মিলতে পারেনি
টাকায় রেখেছে আস্থা।
তারপর থেকে দালানবাড়ির
ফটকের তালা টেকসই,
খুব কাছাকাছি বেঁচে আছি তবু
কেউ কারো সাথে এক নই।
০১.০৫.২০
ডাকটিকিট, অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২১
হয়তো আমারই ভুল
মাপতে পারিনি গভীরতা
কিন্তু তোমার হাতে লেগে থাকা রক্তের দাগ
আমাকে ভাবিয়ে তোলে, ভাবতে গিয়ে
তোমাকে চিনছি আমি নতুন করে।
তোমার বাক্যগুলো জালিমের তৃষ্ণা মিটায়
তোমার চেহারা থেকে মুছে গেছে নূরের আভাস।
তুমি কি এখনো রাতে সেজদায় অবনত হও?
এ মন কেনো যে বলে, এই তুমি সেই তুমি নও।
১৪.০৯.১৯
ডাকটিকিট, অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২১