

ভোর হলে ছোটো পাখি
বলে যায় শিওরে-
সকালের ঘুম নাকি
আলসের প্রিয় রে।
বাগানের ফোঁটা ফুল
মধু তার বাসনা,
বলে খোকা আখি খুল
এখন ঘুমাস না।
ঝিরঝিরে বাতাসেরা
বলে যায় উঠতে,
সকালের সোনা রোদে
প্রাণ খুলে ছুটতে।
দরজাটা খুলে দেখি
ফুলকুঁড়ি ফুটেছে,
প্রজাপতি ভ্রমরেরা
দলে দলে জুটেছে।
সবাই বলে এই মাটিতে
মা গিয়েছে মিশে,
আমি দেখি মায়ের হাসি
একটি ধানের শীষে।
সবুজ পাতায় মুখ লুকিয়ে
টুনটুনিটা ডাকে’
ঘাসের বুকে শিশির জমে
নদীর বাঁকে বাঁকে।
সেই শিশিরে ভোর না হতেই
হীরে মানিক জ্বলে,
রূপ যেনো তার মায়ের মতো
টুনটুনি তাই বলে।
নীল শাড়িটা আকাশ নিলো
সবুজ নিলো বন,
মাটির সাথে মিশলো আমার
বাংলা মায়ের মন।
সকাল হলে মুখ দেখি তার
রাত্রে কালো কেশ,
দেশের মতো মা যে আমার
মায়ের মতো দেশ।
কিশের পাতা মার্চ ২০১৯ সংখ্যায় প্রকাশিত
ইচ্ছে ঘুড়ি ইচ্ছে ঘুড়ি
কোথায় তুমি উড়বে;
সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে
কোন সুদূরে ঘুরবে?
তুমি কি ওই পাখির মতো
আকাশ পানে ছুটবে;
চাঁদের মতো জোছনা দিয়ে
হৃদয়টাকে লুটবে?
তুমি কি ওই নাওয়ের মতো
নদীর জলে ভাসবে;
ভোরের রাঙা সূর্য হয়ে
মিটমিটিয়ে হাসবে?
ইচ্ছে ঘুড়ি ইচ্ছে ঘুড়ি
হৃদয় তীরে ভীড়বে;
দেশ বিদেশে ভ্রমন শেষে
আপন নীড়ে ফিরবে।
দাদুর ছাতা গাছের পাতা
দুলছে বাতাসে,
সাদা সাদা মেঘেরা ফুল
তুলছে আকাশে।
তার মাঝে এক রঙিন ঘুড়ি
উড়ছে আহা! বেশ,
নাটাই হতে ছুটছে খোকা
দুলছে কালো কেশ।
মেঘের কাছে রঙিন ঘুড়ি
খোকার চিঠি সে-
আমার প্রিয় বাগানটাকে
ভেজাও নিমিষে।
সবুজ পাতার মাঝে যখন
ফুঁটবে রঙিন ফুল,
একটা ঘুড়ি তোমায় দিতে
হবে না আর ভুল।
আজকে যদি মেঘের ভেলা
বৃষ্টি হয়ে ঝরে
বাগান মাঝে ফুলের মেলা
সুবাস বিলি করে।
প্রজাপতির রঙিন ডানা
দেখায় যদি তার
লাল-সবুজ আর নাম না জানা
রঙের সমাহার।
দোয়েল যদি শিস বাজায় আর
কোকিল যদি গায়
রংধনুকের রঙের বাহার
নীলের সীমানায়
ভাসে; তবে আমার হৃদয়
আকুল হয়ে চাবে,
আনন্দের ঐ বাদল ধারায়
সকাল-বিকাল নাবে।
শিউলি চারার প্রথম ফোঁটা ফুল
শুকনো শেষের বীজ
একটা হলো খুকুর কানে দুল
একটা হলো নতুন চারা নিজ।
আমি হবো প্রথম থেকে শেষ
ফুটবো, যাবো ঝরে
ফুটলে লোকে বলবে আহা! বেশ
ঝরলে হবো চারাই রুপান্তরে।
আমার মতো তুমিও করো পণ
উর্ধ্বে তোলো হাত
তোমার থেকে নতুন অগনণ
সৃষ্টি হবে সারাটা দিনরাত।
ফুলের মত গাঁথেও যদি মালা
তোমায় আমায় নিয়ে
আত্মত্যাগে মিটবে বুকের জ্বালা
মিষ্টি বাসে ভরবো তাদের হিয়ে।
‘খোকন সোনা তুমি কি ঐ
চাঁদকে ভালোবাসো
ফুলকে ভালোবাসো
পাতার ফাঁকে লুকিয়ে
থাকা
ছোট্ট পাখিটাকে
কিংবা রাতের আঁধারে
যেই
জোনাক জ্বলে থাকে?
খোকন সোনা তুমি কি ঐ
সাগর ভালোবাসো
ঝর্ণা ভালোবাসো
একে-বেঁকে বয়ে চলা
ছোট্ট নদীটাকে
কিংবা সবুজ মাঠের ফসল
নদীর বাঁকে বাঁকে?’
‘ফুলকে আমি ভালোবাসি
ভালোবাসি চাঁদকে,
পাখি ডাকা সকাল আরো
জোনাক জ্বলা রাতকে।
ভালোবাসি সাগর নদী
ঝর্ণা এবং সবুজ মাঠ,
সব মানুষের ভালোবাসা
ভালোবাসার প্রথম পাঠ।’
এই যে পাখি, শুনছো না কি
মিষ্টি তোমার গান,
কে করেছে সুরেলা ঐ
কণ্ঠ তোমার দান?
রোজ সকালে পূব আকাশে
সূর্য যখন ওঠে,
বনে বনে মিষ্টি বাসের
ফুলকলিরা ফোটে;
তখন তুমি কোত্থেকে ভাই
গান শোনাতে আসো,
মিষ্টি সুরে গান শোনাতে
খুব কি ভালোবাস?
একটি পাখি উড়বে বলে
দূর আকাশে মেললো ডানা,
ছোট্ট বুকে খোদাই করা
জীবন পথে হার না মানা।
পালকগুলো বাতাস মাঝে
এই আলোড়ন তুলতে থাকে-
তোমরা যারা দাওনি সাড়া
আজকে জাগো আমার ডাকে।
স্বপ্নগুলো পালক হবে
ইচ্ছে হবে মুক্ত ডানা,
যখন খুশি আসবে ছুয়ে
স্বাধীনতার নীল সীমানা।
একটি পাখি উড়বে বলে
মেলল ডানা দূর আকাশে,
দুই চোখে তার স্বাধীনতার
রঙিন-আভা সূর্য হাসে।