১.
মাটির কাছে একটা সবুজ ভবিষ্যতের গল্প আছে
তোমরা যারা কান রাখোনা মাটির বুকে
তাদের কাছে সেই সবুজের গল্পটা
কেমন যেনো প্রলাপ লাগে।
২.
ইট পাথরের এ সভ্যতায় সবুজটা ঠিক মানায় না
মগজ পাড়ায় বুকের খবর জোর করে কেউ আনায় না।
আর যা আসে ভাসা ভাসা পানার মতো ভেসেই যায়;
হয়তো আমিই উল্টোমানুষ, সবুজ ভালোবেসেই যাই।
স্বপ্নগুলো অন্যরকম / সাইফ আলি
একটা বুনো পাখির পাখায়
জড়িয়ে যাওয়া স্বপ্নগুলো
হাওয়ায় হাওয়ায় ছন্দ আনে;
সেও কি তোমার আমার মতো
জীবনবোধের নামতা জানে?
স্বপ্নগুলো অন্যরকম কেমন যেনো
বাস্তবতার ধার ধারে না,
বুনো পাখির লেজ ধরে সে
গাছে গাছে বেড়ায় ঘুরে
সংসারে না
একটুও তার মন বসে না।
আচ্ছা সে কি যোগ বিয়োগের বালাই জানে?
জেনেই কি লাভ, তার চেয়ে তার
উড়াল দিনের গল্পগুলোই টসটসে না?
সময়ের অল্প কিছু পাতায় / সাইফ আলি
মুছে গেলে কি হয় একটা রাত
ছিড়ে গেলে কি হয় একটা পাতা
যেখানে অনেক রাতের মায়া
সাজিয়ে পূর্ণতা পায় এক জীবনের খাতা-
মুছে গেলে কেবল একটা দিন
কি এমন ক্ষতির হিসেব আসে,
হাজারো দিনের হিসেব ভুলে
যে মানুষ থাকতে ভালোবাসে।
জীবনের অল্প কিছু স্মৃতি
নিয়ে তো সুখেই আছি আমি,
সময়ের অল্প কিছু পাতায়
লেখেছি ভালোবাসার নামই।
হিসেব / সাইফ আলি
জোর করে তুই
তোর করে নিলি
সোর করে আর লাভ কি!?
ঠিক আছে তবে
করবো না সোর
ধরবো না তোর ঘাড়টা;
ঘোর করে রাত
এলে বোঝা যাবে
হিসেব মিলেছে কারটা।
নাটাই-বালক-ঘুড়ি / সাইফ আলি
নিজকে তুমি ভাবছো নাটাই
ঘুড়ির কপাল তোমার হাতে
কিন্তু বালক করছে খেলা
তোমার সাথে বুঝলে না;
পরেরটা তো ঠিক বুঝেছো
নিজের বেলা বুঝলে না।
নিজকে তুমি ভাবছো রাজা
সিংহাসনে অন্য কেউ;
দু’চোখ বুজে দাঁড়িয়ে ছিলে-
দাঁড়ায় তোমার জন্য কেউ?
যেভাবেই তুমি চাওনা মাধবী / সাইফ আলি
যেভাবেই তুমি চাওনা মাধবী
যতটাই তুমি চাও
আমার আছে যা তার থেকে বেশি
পারবোনা দিতে সত্যি।
কথা দিতে আমি পারবোনা কাল
এ পথেই ফিরে আসবো,
পার্কের এই বেঞ্চিতে বসে বাদাম চিবাবো দুইজন,
কথা দিতে আমি পারবোনা কাল সত্যিই ভালোবাসবো।
যেভাবেই তুমি চাওনা মাধবী, যতটাই তুমি চাও
আমার আছে যা তার থেকে বেশি বাতুলতা ছাড়া আর কি-
পারবোনা আমি আগামীকালের সূর্যকে আজ পোঁড়াতে,
পারবোনা এই দু’হাত ঝাপটে শূন্যে নিজেকে ওড়াতে।
অতি সাধারণ ছেলে আমি এক
ব্যংকে অঢেল টাকা নেই,
জীবন গাড়িটা আপোষে চলবে
এমন জাদুর চাকা নেই
তাই, সকাল সন্ধ্যা জীবন যুদ্ধে হতে চাও যদি অংশী
বাজাতেই পারি হাত হাত রেখে দুজনে প্রেমের বংশী।
ঝড়
ঝড়,
পাশ দিয়ে চলে গেল সাঁই-
আশা ছিলো, বাসা ছিলো,
সব ছিলো; নাই।
ঝড়,
কড়মড়-মড়মড় ভাঙে বুঝি ডাল
চুপচাপ ভয় ভয় গায়ে মোড়া শাল।
ঝড়,
ঝাপি খালি চোরাবালি পথ-
যদি থাকে বুকে হিম্মত
আবার নতুন করে গড়।
ফেলে দাও প্রিয় ফুল
ফেলে দাও প্রিয় ফুল
ঝরে যাক কিছু নষ্ট সময় পাতার মতোন…
বর্ষা আসেনি শ্রাবন গিয়েছে চলে
শুন্য কলস ঠনঠন করে খালি,
মরা খালে কিছু বিষাক্ত নীল পানি
নদী ভরা কাচ-বালি।
ফেলে দাও তবু ফুল
ঝরে যাক কিছু শ্বেত পাথরের মেঘ
বৃষ্টিবিহীন শীল,
উঁই ধরা কিছু ছিন্ন বৃক্ষ
হোক দরজার খিল।
আমি-তুমি শীতে কাঁপি
এসি রুমটাতে বসে
এসো, ফুল ফেলে দিয়ে পাপী
অঙ্ক মিলাই কষে।
স্নেহময়ী মা, প্রিয় মা / সাইফ আলি
তোমাকে বললাম, তুমি রাত হয়ে যাও
তোমার আচলে মুখ ঢেকে ঘুমিয়ে নিই বিশুদ্ধ ঘুম
তোমাকে বললাম, এক পশলা বর্ষার ঢল হয়ে যাও
ভিজে ভিজে চৌচির খেতের জমিনটুকু আবাদযোগ্য করে তুলি আরেকটিবার
তুমি মানলে না।
তোমাকে বললাম, আমাকে একটুখানি আকাশ দেখাও
উদোম আকাশ জুড়ে চিলের ডানার মতো ডিগবাজি খাই
অথবা সবুজ ঘাস- কাশবন- বাঁশবন হও
দেখে দেখে দু’চোখের পিপাশা মিটাই
তুমি তার কিছুই হলে না।
তোমাকে বললাম, বর্ণমালা এনে দাও কিছু
শব্দের ভান্ডারে আরো কিছু জমা করি স্মৃতির কবিতা,
অথবা মাথায় শুধু রাখো এক জান্নাতি হাত
চোখ বুজে আরেকটু শুই
অথচ তুমিতো তার একটাও হতে পারো না
পারতেন শুধু সেই স্নেহময়ী মা, প্রিয় মা।
তখন
যখন
বিশ্বাস বুকে খাঁচা ছেড়ে পাখি আকাশে মেলবে ডানা
একা প্রান্তরে জেগে থাকা কোনো বৃক্ষের মৃত শাখা
আবার নতুন পুষ্পে পুষ্পে পূর্ণ করবে তার
এই পথ দিয়ে উড়ে যাওয়া সেই পাখিটির সংসার-
তখন
তুমিও মানুষ পূর্ণ কোরো তোমার
পৃথিবীর কাছে হাজারো ঋণের ভার…